নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের বাকেরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পুলিশ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন খানের স্ত্রী-কন্যা সন্তান সহ একই পরিবারের পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি জাকির খানকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
গত মঙ্গলবার তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামের জয়নাল খানের ছেলে জাকির খান এলাকায় চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী হিসেবে সমধিক পরিচিত।তার সাথে একই গ্রামের বাসিন্দা পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন খানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়া শত্রুতা চলছিল।আলাউদ্দিন খান পেশাগত কারনে ঢাকায় থাকার সুবাদে গত ১৫ আগষ্ট ভোরে আলাউদ্দিন খানের স্ত্রী সানজিদা আক্তার লিজা তার জমিতে একটি ঘর উত্তোলন করতে গেলে জাকির খান ও তার বাহীনির সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র দা,রামদা ও লাঠিসোঠা নিয়ে লিজা বেগমের উপর হামলা চালায় এ সময় জাকির বাহীনির হামলায় আলাউদ্দিন খানের স্ত্রী সানজিদা আক্তার লিজা,কন্যা আসমাউল হুসনা ও তার দুই ভাইয়ের ছেলে আহত হয়।
এদের মধ্য আরিফ খান ও তাহের খান গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।এদিকে বিগত ৭ জুলাই দুপুরে আলাউদ্দিন খানের ভোগ দখলীয় জমিতে বেড়া দিতে আসে।এ সময় আলাুদ্দিন খানের স্ত্রী সানজিদা আফরিন লিজা ও তার কন্যা আসমাউল হুসনা বাঁধা দিলে জাকির খান,সোহেল খান,ফিরোজ খান,ও পলাশ খান তাদেরকে লাঠিসোঠা দিয়ে বেদম মারধর করে এবং আসমাউল হুসনার গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের একটি স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়।এতে আলাউদ্দিন খানের কন্যা আসমাউল হুসনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।এ সময় জাকির খান ও তার সঙ্গীরা আলাউদ্দিন খানের স্ত্রী সানজিদা আফরিন লিজা ও কন্যা আসমাউল হুসনাকে এলাকা ছাড়া করে সব জমি দখল করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকাবে এবং খুন করে হাত পা কেটে টুকরা টুকরা করে লাশ আগুনে পোড়াইয়া নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়।এ ঘটনায় আলাউদ্দিন খানের স্ত্রী সানজিদা আফরিন লিজা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে জীবনের নিরাপত্তার জন্য ১২ জুলাই বাকেরগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন,ডায়েরী নং৪৭৯ পরে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জাকির খান সহ ১১জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।মামলা নং সি আর ১৭৪/২০২০। এ মামলায় জাকির খান জেল হাজতে থাকলেও বাকীরা পুলিশের কাছে পলাতক থাকলেও এলাকায় বীর দর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে আরো জানা গেছে, জাকির খান এলাকায় একজন ভূমিদস্যু হিসেবে সমধিক পরিচিত। তার ভাই মনিরুজ্জামান বিমান বাহিনীর সদস্য হওয়ায় তার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে জাকিরের প্রধান সহযোগী সোহেল খানকে দিয়ে হানুয়া গ্রামে একটি সন্ত্রাসী বাহীনী তৈরী করেছে।যার সদস্য আল আমিন,পলাশ, ফিরোজ খান,নিরব,সোহাগ,মিরাজ ও ইউসুফ। এরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাতের আঁধারে এলাকায় মহড়া দিয়ে নিরীহ লোকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নানা রকম অপকর্ম করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এরা অন্যর জমি দখল করে বালু ভরাট করে,এলাকায় কেউ ঘরবাড়ি তুলতে গেলে তার কাছে চাঁদাদাবী করে এবং ঘর তুলতে বাঁধা দেয়।সাধারন মানুষকে অহেতুক হয়রানি করে। এদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায়না। কেউ তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে জাকির খান তার সন্ত্রাসী পেটোয়া বাহীনী দিয়ে তাকে শায়েস্তা করে।অবিলম্বে সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্য সদস্যদের আইনের আওতায় আনা এবং সন্ত্রাসী জাকিরসহ অন্যান্য সকল সদস্যের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সংস্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply