মোঃ কামরুল হাসান শাহিন
গণিত একটি মৌলিক এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। কিন্তু অনেক ছাত্রই গণিতকে ভয় পান। এটির প্রতি অস্বাভাবিক ভয় এবং অনীহা তৈরি হয় বিভিন্ন কারণে, যেমন ভুল ধারণা, আগের ভুল পরীক্ষার অভিজ্ঞতা, বা শিক্ষক এবং পরিবার থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া। প্রবন্ধটির উদ্দেশ্য হলো, এই ভীতি কাটিয়ে গণিতকে সহজ, আনন্দদায়ক এবং সবার জন্য প্রবেশযোগ্য করার উপায় খোঁজা।
উদাহরণ: অনেক ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষার আগে গণিত নিয়ে চিন্তা করতে গিয়েই মনোবল হারিয়ে ফেলেন, যেমন- “আমি কখনো গণিতের প্রশ্নে ভালো করতে পারব না, ” এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তা তাদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।
গণিত: একটি বাস্তবধর্মী বিদ্যা
গণিত শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্য শিখা উচিত নয়, এটি আমাদের জীবনের বিভিন্ন দিকের মধ্যে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। আমরা দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় গণিত ব্যবহার করি: বাজারে কেনাকাটা, খাবারের মাপ, সময় নির্ধারণ, এবং বিভিন্ন হিসাব-নিকাশের মধ্যে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ: ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার সময় সুদের হিসাব, বা কোনো ব্যবসার লাভ-ক্ষতি বের করার জন্য গণিতের প্রয়োগ। এছাড়াও, রান্নায় উপকরণের পরিমাণ বা সময় হিসাব করা।
কেন আমরা গণিতকে ভয় পাই?
গণিতভীতি সৃষ্টি হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। ছাত্ররা যখন গণিতের সমস্যা সমাধান করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি বা আত্মবিশ্বাসী হয় না, তখন তারা ভয় পেতে শুরু করে। আরও কিছু কারণ, যেমন গাণিতিক অভ্যস্ততার অভাব, ভুল ধারণা এবং অপর্যাপ্ত শিক্ষার কারণে গণিতকে কঠিন মনে হয়।
উদাহরণ: অনেক ছাত্ররা মনে করেন যে গণিত “খুব কঠিন, ” বা “এটি শুধুমাত্র মেধাবী ছাত্রদের জন্য। ” তাদের এই ধারণা সত্য নয়, তবে ভুল শিক্ষা বা অতিরিক্ত চাপ এ ধারণাগুলোর জন্ম দেয়।
শিশুদের মধ্যে গণিতভীতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ
শিশুদের মধ্যে গণিতভীতি সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ হলো তাদের প্রথম জীবনে ভুল ধারণা বা পদ্ধতি দ্বারা শিখানো। এই ভীতি দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকতে পারে এবং এটি আরও জটিল হয়ে ওঠে যদি তাদের আত্মবিশ্বাস কমে যায়। স্কুলে প্রথম গণিতের অভিজ্ঞতা যদি নেতিবাচক হয়, তবে এটি তাদের দীর্ঘস্থায়ী ভীতি তৈরি করতে পারে।
উদাহরণ: একটি ছোট শিশু যদি প্রথমবার একটি গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে না পারে, তবে সে মনে করতে পারে যে সে “গণিতের জন্য উপযুক্ত নয়। ”
পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাব
গণিতভীতির অনেক সময় মূল উৎস পরিবার ও সমাজ থেকে আসে। যদি পিতামাতা বা পরিবারের সদস্যরা গণিতকে ভয় পেয়ে থাকেন, তাহলে শিশুদেরও সেই ধারণা গড়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি, সমাজের মধ্যে গণিতের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি যেমন “মেয়েরা গণিত ভালো পারে না, ” এই ধরনের ধারণাও গণিতভীতি তৈরি করে।
উদাহরণ: একটি মেয়ে যদি শুনে থাকে যে “মেয়েরা গণিতে ভালো হয় না, ” তবে তার জন্য গণিতের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে।
বিদ্যালয়ের ভূমিকা
স্কুলের পরিবেশ এবং পাঠ্যক্রমের গঠন অনেকটাই গণিতভীতির প্রতি প্রভাব ফেলে। কঠিন পাঠ্যক্রম এবং অত্যধিক চাপ ছাত্রদের মধ্যে নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি করতে পারে। তবে, যদি শিক্ষকরা সহায়ক মনোভাব নিয়ে শেখান এবং নিয়মিত সহায়তা প্রদান করেন, তবে এটি তাদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করতে পারে।
উদাহরণ: একটি স্কুলে, যদি ছাত্ররা সহজ ও ধীরে ধীরে গণিত শিখতে পারে, তারা গণিতের প্রতি আগ্রহী হবে।
গণিত শিক্ষক ও শিক্ষণ পদ্ধতির প্রভাব
গণিতের শিক্ষক যদি গঠনমূলক এবং ইতিবাচক পদ্ধতিতে গণিত শেখান, তবে ছাত্রদের মধ্যে গণিতের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে। পদ্ধতিগতভাবে ছোট ছোট ধাপে সমস্যা সমাধান এবং বিষয়গুলো সহজভাবে উপস্থাপন করলেই গণিত শিখতে সহজ হয়।
উদাহরণ: একজন শিক্ষক যদি গণিতের সমস্যা ছোট অংশে ভাগ করে ছাত্রদের বোঝান, তাহলে ছাত্ররা কম সময়েই এটি সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন।
গণিতভীতি কাটানোর উপায়
গণিতভীতি কাটানোর জন্য প্রথমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের ভুলগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরে তাদের শেখার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে হবে। এটি করা সম্ভব যদি শিক্ষকরা ধীরে ধীরে গণিতের বিভিন্ন বিষয় শেখান, এবং ছাত্রদের প্রশংসা করেন তাদের সামান্য অর্জনগুলোর জন্য।
উদাহরণ: একটি ছাত্র যিনি প্রথমে গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে পারেননি, কিন্তু কিছু সময় পর তিনি এটি সমাধান করেছেন, তাকে তার অগ্রগতি নিয়ে প্রশংসা করা উচিত।
মনস্তাত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আত্মবিশ্বাস
গণিত শেখার ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি খুব গুরুত্বপূর্ণ। “ফিক্সড মাইন্ডসেট” বা “গ্রোথ মাইন্ডসেট” এর মধ্যে পার্থক্য ছাত্রদের গণিতের প্রতি আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
উদাহরণ: “আমি এটি করতে পারব না” এই ধরনের মনোভাব পরিবর্তন করে, “আমি এটি শিখতে পারব যদি আমি পরিশ্রম করি” এই মনোভাব গড়ে তোলার মাধ্যমে গণিত শিখতে আগ্রহী হওয়া সম্ভব।
খেলাধুলার মাধ্যমে গণিত শেখা
গণিত শেখার জন্য খেলা একটি কার্যকর পদ্ধতি। এটি শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দ সৃষ্টি করে এবং তারা যেন গণিতকে “খেলা” হিসেবে গ্রহণ করে। গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য খেলাধুলার উপকরণ ব্যবহার করা তাদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে।
উদাহরণ: রুবিকস কিউব, বা গণনা গেম, যেখানে গাণিতিক সমস্যাগুলো খেলার মাধ্যমে সমাধান করতে হয়।
গল্পে গল্পে গণিত
গল্পের মাধ্যমে গণিত শেখানো একটি অভিনব উপায়। গল্পের মাধ্যমে ছাত্রদের যুক্তিসংগত চিন্তা তৈরি হয় এবং তারা ধীরে ধীরে সমস্যার সমাধানে প্রবৃত্তি হয়।
উদাহরণ: “গণিতের রাজা” নামক একটি গল্প, যেখানে গণিতের চরিত্ররা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আনন্দ লাভ করে।
গণিতে কল্পনা ও সৃজনশীলতা
গণিত শুধুমাত্র কঠিন সমীকরণ নয়; এটি একটি সৃজনশীল এবং কল্পনাশক্তির বিষয়। গণিতের মাধ্যমে নতুন নতুন ধারণা ও চিন্তা তৈরি করা সম্ভব। এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা এবং নতুন ভাবনার জগত খুলে দেয়।
উদাহরণ: কোনও সমীকরণের সমাধান করতে গেলে, যদি আমরা একাধিক উপায় অবলম্বন করি, তবে ছাত্ররা এটি শেখার সময় আরও সৃজনশীল চিন্তা করবে।
গণিত ও প্রযুক্তি
আজকের যুগে প্রযুক্তি গণিত শেখানোর ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন, ওয়েবসাইট, এবং সফটওয়্যারের মাধ্যমে ছাত্ররা গণিতের সমস্যা সহজে সমাধান করতে পারে। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেমন Khan Academy, Brilliant.org, এবং Geogebra, শিক্ষার্থীদের জন্য একটি যুগান্তকারী উপায় হিসেবে গণিত শেখানোর প্রক্রিয়া সহজ করে তুলেছে।
উদাহরণ: Geogebra ব্যবহার করে ছাত্ররা গ্রাফ আঁকার মাধ্যমে গাণিতিক ধারণাগুলি দৃশ্যমানভাবে শিখতে পারে, যা তাদের গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করে।
গণিত শেখার কৌশল ও স্মার্ট টিপস
গণিত শেখার জন্য কিছু কৌশল এবং স্মার্ট টিপস অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। প্রথমত, গণিতের সমস্যাগুলিকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে নিন। নিয়মিত অনুশীলন এবং খোলামেলা আলোচনা দ্বারা ছাত্রদের ভীতি কমানো সম্ভব। সময় ব্যবস্থাপনা, আগের ভুল গুলি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা এবং প্রতিদিন কিছু সময় গণিত নিয়ে কাজ করা, এগুলি সবই শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারে।
উদাহরণ: ছাত্ররা যদি প্রতিদিন ৩০ মিনিট গণিত অনুশীলন করে, তবে তারা ধারাবাহিকভাবে আগের ভুলগুলো সংশোধন করতে পারে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে।
গণিতভীতির বিরুদ্ধে সফল মানুষদের গল্প
গণিতভীতি কাটানোর জন্য বিভিন্ন সফল মানুষের গল্প শুনলে ছাত্ররা অনুপ্রাণিত হয়। যেমন, “স্টিফেন হকিং” বা “ম্যালালা ইউসুফজাই” যারা গণিত ও বিজ্ঞান অধ্যয়নে সাফল্য অর্জন করেছেন, কিন্তু শুরুতে তারা গণিত বা বিজ্ঞান বিষয়ে ভয় পেতেন। এই ধরনের গল্প শিক্ষার্থীদের আরও সাহসী করে তোলে এবং তারা নিজেদের ভীতিকে দূর করতে অনুপ্রাণিত হয়।
উদাহরণ: স্টিফেন হকিং-এর জীবনের গল্প থেকে শিক্ষা নিয়ে ছাত্ররা বুঝতে পারে যে, প্রচেষ্টা এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের গণিতভীতি এবং সমাধান
উদাহরণ: গ্রামীণ অঞ্চলে একটি শিক্ষামূলক প্রকল্প চালু করা, যেখানে শিক্ষকদের গ্রাম্য অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
মেয়েরা ও গণিত: একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি
মেয়েদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ কম হওয়ার পেছনে সমাজের কিছু প্রচলিত ধারণা রয়েছে, যেমন “মেয়েরা গণিতে ভালো নয়”। এই ধরনের ধারণা ভেঙে ফেলতে হবে। গণিতভীতি কাটাতে মেয়েদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের উৎসাহিত করার জন্য আরও ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত।
উদাহরণ: একটি স্কুলে মেয়েদের জন্য গণিত অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা, যেখানে তারা নিজেদের দক্ষতা প্রকাশ করতে পারে এবং তাদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
পরীক্ষাভীতি বনাম গণিতভীতি
যদিও পরীক্ষাভীতি এবং গণিতভীতি আলাদা আলাদা বিষয়, তবে এগুলোর মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। পরীক্ষার চাপ গণিতের প্রতি ভীতি বাড়িয়ে দিতে পারে। ছাত্রদের মনে রাখতে হবে যে, গণিত একটি দক্ষতা, যা সময়, পরিশ্রম এবং নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করা যায়। পরীক্ষার আগে মানসিক প্রস্তুতি, ধীরস্থির মনোভাব এবং নিয়মিত প্র্যাকটিস ছাত্রদের পরীক্ষায় সফল হতে সাহায্য করে।
উদাহরণ: একটি ছাত্র যে গণিতের জন্য ভীত, যদি সে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয় নিয়মিত অনুশীলন এবং বিশ্রাম নিয়ে, তবে তারপরীক্ষার প্রতি মনোবল বাড়বে এবং গণিতভীতি কমবে।
গণিত অলিম্পিয়াড ও গণিতে উৎসাহ
গণিত অলিম্পিয়াড এবং অন্যান্য গণিত প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ এবং উৎসাহ সৃষ্টি করে। এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ছাত্ররা তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং গণিতভীতি দূর হয়। পাশাপাশি, এটি তাদের আত্মবিশ্বাস ও কৃতিত্বের অনুভূতি তৈরি করে।
গণিত চর্চায় পিতামাতার ভূমিকা
গণিত শেখানোর ক্ষেত্রে পিতামাতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যদি তাদের সন্তানদের উৎসাহিত করে এবং গণিতের প্রতি সঠিক মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করেন, তবে সেই সন্তানদের মধ্যে গণিতভীতি অনেকাংশে কমে যায়। পরিবারের সদস্যদের সহায়তা এবং সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি সন্তানদের গণিতকে সহজভাবে গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
উদাহরণ: একজন বাবা বা মা যদি সন্তানের গণিত সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করেন এবং গণিত শেখার আনন্দ সৃষ্টি করেন, তবে সন্তানের ভীতি অনেক কমে যাবে।
শিক্ষকদের জন্য পরামর্শ
শিক্ষকদের জন্য একটি পরামর্শ হতে পারে যে তারা যেন শিক্ষার্থীদের গণিত শেখানোর সময় একটি সজাগ এবং সহায়ক মনোভাব ধারণ করেন। ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে শেখানো এবং তাদের ভুলগুলোকে পরবর্তীতে ঠিক করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ: শিক্ষক যদি ছাত্রদের গণিত শেখানোর সময় মাঝে মাঝে প্রশ্ন করেন, “এটা কীভাবে বুঝলে?”, তাহলে ছাত্ররা আরও ভালোভাবে সমস্যা সমাধান করতে পারবে।
টিউটরের ভূমিকা
টিউটরদের ভূমিকা গণিত শেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যাদের গণিতভীতি আছে। তারা একজন একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কাজ করে সমস্যাগুলো বুঝতে সাহায্য করতে পারে এবং অতিরিক্ত সাহায্য প্রদান করতে পারে। ছাত্রদের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে টিউটররা খুবই কার্যকরী।
উদাহরণ: একজন টিউটর ছাত্রদেরকে ছোট ছোট অংশে সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে, যাতে তারা বড় সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে।
অনলাইন গণিত প্ল্যাটফর্ম ও অ্যাপস
অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি যেমন Khan Academy, Coursera, Duolingo Math, এবং Mathway, শিক্ষার্থীদের জন্য সাশ্রয়ী এবং কার্যকরী মাধ্যম। তারা কেবলমাত্র প্রশ্নের উত্তর দেয় না, বরং ছাত্রদের বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তৃত ধারণা এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল শেখায়।
উদাহরণ: Khan Academy-র মাধ্যমে একজন ছাত্র তার নিজস্ব গতিতে গণিতের বিভিন্ন দিক শিখতে পারে, যা তার গণিতভীতি কমাতে সাহায্য করে।
একটি গণিতবান্ধব সমাজ গঠনের পথে
গণিত শেখানোর ক্ষেত্রে একটি গণিতবান্ধব সমাজ গঠন করতে হবে। এই সমাজে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং অন্যান্য সদস্যদের সমর্থন থাকতে হবে যাতে গণিতভীতি দূর হয়ে যায়। সবাইকে গণিতকে সহজ, প্রিয় এবং উদ্বুদ্ধ হওয়ার বিষয় হিসেবে দেখতে হবে।
উদাহরণ: একাধিক স্কুলে গণিত উৎসব বা গণিত মেলা আয়োজন করে, যেখানে ছাত্ররা গণিতের মজাদার দিকগুলো আবিষ্কার করতে পারে।
উপসংহার
এখন, যখন গণিতভীতি কাটানোর এবং গণিতকে সহজ ও আনন্দময় করে তোলার নানা উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তখন সবার মনে রাখা উচিত যে গণিত একটি দক্ষতা, যা সময়, পরিশ্রম এবং সমর্থনের মাধ্যমে অর্জন করা যায়। এই প্রবন্ধের মাধ্যমে যে মূল বার্তা দেওয়া হয়েছে তা হলো, গণিত শেখার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং পদ্ধতিগত পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ: একদিন, একজন শিক্ষার্থী যে গণিত শিখতে ভয় পেত, এখন সে এটি উপভোগ করছে এবং তার সহপাঠীদেরও শেখানোর জন্য প্রস্তুত।
এইভাবে, পুরো প্রবন্ধটি বিস্তারিতভাবে কাঠামোবদ্ধ এবং উদাহরণসহ সাজানো হলে এটি আরও কার্যকরী এবং শিক্ষামূলক হবে।
লিখেছেনঃ মোঃ কামরুল হাসান শাহিন, সহকারী শিক্ষক(গনিত), চর আর কলমী গাফুরিয়া দাখিল মাদ্রাসা
Leave a Reply