স্টাফ রিপোর্টার।। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের জের ধরে মহিলা সহ একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার চেষ্টায় এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে ভূমি দস্যুরা। শুক্রবার (২১ জুলাই) দুপুর ১২ টায় ৬ নং দক্ষিণ মসজিদ বাড়িয়া ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বয়াতি বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, ওই গ্রামের বাসিন্দা আতাহার বয়াতির ছেলে হুমায়ুন কবির বয়াতি, মোস্তাফিজুর রহমান বয়াতি, নান্নু বয়াতি ও মেয়ে কহিনুর বেগম। বর্তমানে তারা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহত হুমায়ুন কবির অভিযোগ করে জানান, তার বাবা আতাহার বয়াতির পৈত্রিক সম্পত্তি প্রায় একর ৩ একর ১৩ শতাংশ জমি দীর্ঘ দিন ধরে জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছে তারই চাচাতো ভাই হাকিম ও তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় তার বাবা আতাহার বাদী হয়ে ২০২২ সালে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় আদালত কাগজপত্র দেখে তাদের পক্ষে রায় দেয় এবং সেখানে উল্লেখ থাকে যে জমি তাদের তারা চাষবাস করবে। আদালত থেকে এ নির্দেশ স্থানীয় থানায় পাঠালে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ তা আমলে না নিয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় ফারির পুলিশ পাঠায়।
তারই সূত্র ধরে ঘটনার দিন শুক্রবার দুপুরে হুমায়ুন কবিরের লোকজন তাদের জমিতে চাষ করতে যায়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের সম্মুখে হাকিমের মেয়ে মহিলা কিলার নাজু তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় তার মাথায় থাকা হেলমেট চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। পরে তার স্বামী বেল্লাল, হেলাল, ইউসুফ ও চাচা সেকান্দার সহ কয়েকজন সন্ত্রাসী রামদা ও চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তার ডাক চিৎকারে তার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান,নান্নু ও বোন কহিনুর তাকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তারা কহিনুরের গলায় থাকা ১টি স্বর্ণের চেইন, একজোড়া কানের ঝুমকা, ১ টি স্বর্ণের বেচলাইট ও ৪ জনের কাছ থেকে ৪ টি উন্নত মানের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক সুবিদখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহতদের অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। আহতদের মধ্যে হুমায়ুন কবিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাকে যেকোনো সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করতে পারে বলে ও ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, আমি সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ফারির পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রথমে ওরা বুঝতে পারেনি এরকম ঘটনা ঘটবে। তাই স্বল্প ফোর্স নিয়ে গিয়েছে। পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে না পেরে পুনরায় আরো ফোর্স নেয়। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply