শিক্ষা আলো ডেস্ক:
ময়মনসিংহে বন্ধের নির্দেশ মানছে না কোচিং সেন্টারগুলো। কোচিং সেন্টারগুলোর শিক্ষক ও পরিচালকেরা বলছেন, সরকারিভাবে বন্ধের নির্দেশনা তাঁদের কাছে আসেনি।
এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশ অনুযায়ী গত সোমবার থেকেই কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ময়মনসিংহে সে নির্দেশ মানা হচ্ছে না।
ময়মনসিংহ নগরের বাউন্ডারি রোডে রয়েছে কয়েক শ কোচিং সেন্টার। যে কারণে নগরের ওই এলাকাকে অনেকেই ‘কোচিং পাড়া’ নামে ডাকেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ কোচিং সেন্টার খোলা রয়েছে। বাউন্ডারি রোডে এবং বাউন্ডারি রোড থেকে যাওয়া বিভিন্ন গলির মোড়ে মোড়ে গড়ে ওঠা কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড়। এ সময় একাধিক অভিভাবকের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কোচিং সেন্টারগুলো থেকে বন্ধের কথা বলা হয়নি। যে কারণে তাঁরা সন্তানদের নিয়ে এসেছেন।
তবে কোচিং সেন্টারগুলোর শিক্ষক ও পরিচালকেরা বলছেন, সরকারিভাবে বন্ধের কোনো নির্দেশ তাঁদের কাছে আসেনি। যে কারণে তাঁরা কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছেন।
প্রতিশ্রুতি কোচিং সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সবগুলো কক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। প্রতিশ্রুতি কোচিংয়ের পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘অন্যান্যবার এসএসসি পরীক্ষার আগে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধের জন্য লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়। তবে এবার লিখিত নির্দেশ না পাওয়ায় কোচিং সেন্টার বন্ধ করা হয়নি। এ ছাড়া আমরা বন্ধ রাখলেও অন্যরা বন্ধ রাখে না। এ জন্য অভিভাবকদের চাপে আমরা খোলা রেখেছি।’
রিয়্যাল ম্যাথ নামের একটি কোচিং সেন্টারেও দেখা গেছে ক্লাস চলতে। ওই কোচিং সেন্টারের অফিস সহকারী হেজবুল্লাহ সোহান বলেন, কোচিং বন্ধ করতে বলেছে কি না, সেটি তিনি জানেন না। কোচিং সেন্টারের পরিচালক রিয়্যাল মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি খোলা রয়েছে বাউন্ডারি রোডে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানোর কেন্দ্রগুলোও। ওই সড়কের একটি বাড়ির নিচতলায় চারজন শিক্ষক চারটি কক্ষে পড়ান। সেগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা যায়। মো. সজীব নামের একজন শিক্ষক বলেন, ‘বন্ধের নির্দেশনা আমি জানি। বৃহস্পতিবার থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। ওই দিন থেকে বন্ধ করে দেব।’
‘কোচিং পাড়া’য় কথা হয় ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারা জানায়, বন্ধের কথা কোচিং সেন্টার থেকে বলা হয়নি। তবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা তারা জানে।
ময়মনসিংহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম দেশ আলোকে বলেন, ‘১২ সেপ্টেম্বর থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার যে নির্দেশনা সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়েছে, এটিই চূড়ান্ত নির্দেশনা। আমরা কোচিং সেন্টারগুলোর দ্বারে দ্বারে চিঠি নিয়ে যেতে পারব না। যারা নির্দেশনা মানছে না, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply