সারাদিন রোজা রাখার পর একটু ভালো খেতে অনেক পরিবারই নির্ভর করে বাইরের ইফতারের ওপর। এবারের চিত্রটা একটু অন্যরকম। লাখো মানুষের জীবন কেড়ে নেয়া বৈশ্বিক মহামারির প্রভাব পড়েছে ইফতারের বাজারেও। ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে আছে অদৃশ্য এক ভয়।
মোগল আমলের চিহ্ন পুরান ঢাকা থেকে ধীরে ধীরে বিদায় নিলেও রসনাবিলাসের সুবাস এখনো রয়েছে। শত শত বছর ধরে রমজানে ইফতার বিকিকিনি হয়ে এলেও এবারের দৃশ্য ভিন্ন। চকবাজারে নেই বাহারি ইফতার, নেই হাঁকডাক।
সরেজমিন দেখা গেছে, পুরান ঢাকার গলিতে গলিতে নেই বাহারি ইফতারের মেলা। অন্য বারের মতো আস্ত খাসির রোস্ট, আস্ত মুরগির ফ্রাই, জালি কাবাব, সুতি কাবাব, টিকা কাবাব, শাহী কাবাব, কবুতরের রোস্ট, কোয়েলের রোস্ট, ডিম চপ, ডিম কোপ্তা, সাসলিক, ভেজিটেবল রোল, চিকেন রোল, দইবড়া, হালিম, লাচ্ছি, পনির, পেস্তা বাদামের শরবত, লাবাং, মাঠা, কিমা পরোটা, ছোলা, মুড়ি, ঘুগনি, সমুচা, বেগুনি, আলুর চপ, পিঁয়াজু, জিলাপিসহ নানা পদের পসরা সাজানো খাবার নেই। বিক্রেতাদের হাঁকডাক নেই, তেমনি নেই ক্রেতাদের ভিড়। এ যেন এক অচেনা চকবাজার। চারদিকে সুনসান। এমন দৃশ্য অাগে কখনো দেখেননি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রতি বছর রমজান এলেই বাহারি সব ইফতার আইটেমের পসরা সাজানো হতো রাজধানীর বেইলি রোডের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়। বসতো অস্থায়ী ইফতার বাজারও। তবে এবার বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। দুই-চারটা রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও সেখানে ভিড় তেমন নেই। যথা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব মেনে ইফতার কিনছেন সবাই।
প্রায় একই অবস্থা রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীর। স্বনামধন্য বেশিরভাগ খাবারের দোকানই বন্ধ। দোকান মালিকরা জানালেন, সাধারণ ছুটির কারণে কর্মচারীরা গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন।
তবে বিভিন্ন অলি-গলিতে খুলেছে অস্থায়ী ইফতারের দোকান। ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী বিকেল ৪টার পর রেস্তোরা বন্ধের কথা বলা হলেও রাজধানীর অনেক জায়গায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ইফতার বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ঢাকার বাইরেও ভিড় নেই ইফতার বাজারে। ক্রেতা-বিক্রেতা সবার মাঝেই রয়েছে করোনা আতঙ্ক।
Leave a Reply